সতিপট্ঠান

সতিপট্ঠান সুত্ত
(বাংলা পদ্য)  

বন্দনা : 
ভগবান অরহত সম্যক সম্বুদ্ধে,
কায়, মনো,বাক্যে নমি শ্রদ্ধা নত শিরে।
দ্বিতীয়, তৃতীয় বার ও সম্যকসম্বুদ্ধে,
কায়,মনো, বাক্যে নমি শ্রদ্ধা নত শিরে।
সূচনা :
‍'এরূপ শুনেছি আমি ভগবান মুখে',
কহিলেন আনন্দ থের সঙ্গীতি সম্মুখে।
একসময় ভগবান কুরুরাজ্যে গেলে, 
কম্মসস  ধম্মেতে তিনি অবস্থান কালে; 
ভিক্ষুগণে ডেকেবলেন বুদ্ধ একদিনে, 
ধর্মদেশন করবো আমি শুন ভিক্ষুগণে! 
সাধু!  বলে ভিক্ষুগণ ইচ্ছা প্রকাশিলে, 
সতিপট্ঠান সুত্ত বর্ণন করেন এই বলে- 
উদ্দেশ পর্ব : 
ইহাই একমাত্র মার্গ ওহে ভিক্ষুগণ ! 
সত্ত্বগণের চিত্ত শুদ্ধি লাভের কারণ।
শোকতাপ অতিক্রম দু:খ দৌর্মনস্যে, 
অস্তমিত করে সাধক প্রজ্ঞা আধিপত্যে।
নির্বাণ সাক্ষাতে এই চারি সতিপট্ঠান,
ইহাই একমাত্র মার্গ বলেন ভগবান।
১.চারি সতিপ্ঠান ভাবনা জান কি প্রকারে;
ভাবনা করিবে সাধক কায়দর্শী হয়ে।
পরাক্রমী, সাবধানী এই ক্লেশ নাশে,
স্মৃতিতে আনত রবে অনাশক্তি বশে।
২. বেদনায় বেদনাদর্শী হয়ে করিবে বিহার;
অভিদ্যা দৌর্মনস্য নাশি ক্লেশ-মার।
পরাক্রমী সাবধানী এই ক্লেশ নাশে,
স্মৃতিতে আনত রবে অনাসক্তি বশে।
৩. চিত্তে চিত্তানুদর্শী করিবে বিহার,
অভিদ্যা দৌর্মনস্য নাশি ক্লেশ-মার।
পরাক্রমী সাবধানী এই ক্লেশ নাশে,
স্মৃতিতে আনত রবে অনাসক্তি বশে।
৪. ধর্মে ধর্মানুদর্শী করিবে বিহার,
অভিদ্যা দৌর্মনস্য নাশি ক্লেশ-মার।
পরাক্রমী সাবধানী এই ক্লেশ নাশে,
স্মৃতিতে আনত রবে অনাসক্তি বশে।

কায়ানুদর্শনে 
১। আনাপান স্মৃতি বর্ণনা
কায়ে কায়ানুদর্শন কিভাবে করিবে?
বুদ্ধের শিক্ষাতে ভিক্ষু অরণ্যতে যাইবে।
বৃক্ষমূল বা শূন্যগৃহ যে কোন একটিতে,
সোজাদেহে পদ্মাসনে সাধক বসিবে।
সম্মুখেতে স্মৃতিরবিষয় উপস্থিত করিবে,
মনেযোগের সাথে তিনি শ্বাস প্রশ্বাস নিবে।
দীর্ঘ শ্বাস গ্রহণে জানে দীর্ঘ শ্বাস নিচ্ছি,
দীর্ঘশ্বাস ত্যাগে জানে দীর্ঘভাবে ফেলছি।
হ্রস্বশ্বাস গ্রহণে জানে হ্রস্ব শ্বাস নিচ্ছি,
হ্রস্বশ্বাস ত্যাগে জানে হ্রস্বভাবে ফেলছি।
সারাদেহ ব্যাপী সাধক শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া,
অনুভব করিতে তিনি করিবেন শিক্ষা।
কায়কর্মে প্রশান্তিতে শ্বাস নিতে শিখিবে,
কায়কর্মে প্রশান্তিতে শ্বাস ত্যাগ শিখিবে।
দক্ষ কর্মকার বা তার অন্তেবাসী;
লৌহতপ্ত কালে স্মৃতিমান অতি।
দীর্ঘ টান দিলে জানে দীর্ঘভাবে টানছি,
হ্রস্ব টান দিলে জানে হ্রস্বভাবে টানছি।
এভাবে জানিবে ভিক্ষু স্মৃতিমান হয়ে,
আনাপান ভাবনায় যিনি নিয়োজিত হবে।
দীর্ঘশ্বাস গ্রহণে জানে দীর্ঘভাবে টানছি,
দীর্ঘশ্বাস ত্যাগে জানে দীর্ঘভাবে ফেলছি।
হ্রস্বশ্বাস গ্রহণে জানে হ্রস্ব শ্বাস টানছি,
হ্রস্ব শ্বাস ত্যাগে জানে হ্রস্বভাবে ফেলছি।
সারাদেহ প্রতি সাধক শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া,
অনুভব করিতে তনি করিবেন শিক্ষা।
কায়কর্মে প্রশান্তিতে শ্বাস গ্রহণ শিখিবে ,
কায়কর্মে প্রশন্তিতে শ্বাস ত্যাগ শিখিবে।
ভাবনায় পূর্ণ সাফল্য লাভের উপায়ঃ-
এভাবে  স্বদেহে সাধক কায়দর্শী হবে ,
অন্যদেহকে সাধক সেভাবে দেখিবে।
সময়ে স্ব পরদেহ সাধক একসাথেদেখিবে,
প্রতিক্রিয়া সাবধানে প্রত্যক্ষ করিবে।
সময়ে শুরুকে তার সবিশেষ জানিবে,
সময়ে সমাপ্তি তার সবিশেষ জানিবে।
সময়ে শুরু ও শেষ প্রত্যক্ষ করিবে,
এভাবে 'উদয়-বিলয়' জ্ঞান আহরিবে।
প্রত্যয়জাত দেহ আছে এই মাত্র স্মৃতি,
জ্ঞান ও প্রতিস্মরণে তা যথেষ্ট হে যতি!
অনাসক্ত চিত্তে সাধক বিহার করিবে 
পঞ্চস্কন্ধে অনাসক্তি বজায় রাখিবে।
এভাবে দেহেতে সাধক রক্ষা করলে স্মৃতি ,
অনিবার্য হয় তার নির্বাণেতে গতি।
[আনাপান ভাবনা বর্ণনা সমাপ্ত]








...........চলমান.........................................................